সাইফুল ইসলাম ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহে দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের দেড় ডজনের বেশি নেতাকর্মীকে ‘বিচারবহির্ভূতভাবে’ হত্যা এবং কোটি কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চাকরিচ্যুত পুলিশ সুপার (এসপি) আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে। তাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল কথিত ‘ক্রসফায়ার রাজত্ব’। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও দুর্নীতির মামলা হলেও নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি।
২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত ঝিনাইদহে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আলতাফ হোসেন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক হয়ে বিএনপি-জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্টদের গুম, খুন ও নির্যাতনের নেপথ্যে ছিলেন।
বিভিন্ন মামলার এজাহার অনুযায়ী, তিনি ৮টি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি প্রধান আসামি। মামলাগুলোর বেশ কয়েকটিতে তার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে আরও ৪৩ পুলিশ সদস্য ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের ১৫৯ নেতাকর্মীকে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন যুবদল নেতা মিরাজুল, শিবির নেতা ইবনুল পারভেজ, জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলী পান্না, শিবির নেতা সাইফুল ইসলাম মামুন, জামায়াত নেতা এনামুল, ইউপি সদস্য হাফেজ আবুল কালাম আজাদসহ অনেকে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, ‘ক্রসফায়ারের ভয়’ দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হতো। অনেকে জীবন বাঁচাতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা তুলে দিয়েছেন পুলিশের হাতে।
এসপি আলতাফ শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগেই নয়, স্বর্ণ আত্মসাতের ঘটনায়ও অভিযুক্ত। সাতক্ষীরায় বদলির পর ২০১৬ সালে বিপ্লব চ্যাটার্জি নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করা ১২০ ভরি স্বর্ণ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ১৮ মে তিনি চাকরিচ্যুত হন।
এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঝিনাইদহের বর্তমান পুলিশ সুপার মো. মনজুর মোর্শেদ বলেন, “তদন্ত চলমান। ঘটনাগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় সময় লাগছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলেই গ্রেপ্তার করা হবে।