মাও. ওয়ালিউল্লাহ
হজ শেষে মদিনায় যাওয়ার কারণ রয়েছে কয়েকটি। হজের ফরজ ও ওয়াজিব আমল সবই মক্কায় সম্পন্ন হয়। তবে মদিনায় যাওয়ার গুরুত্ব এবং ফজিলত ইসলামের দৃষ্টিতে অনেক বেশি, যদিও তা হজের অংশ নয়।
১. রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত: ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে আমার ওফাতের পর আমার (রওজা) জিয়ারত করল, সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করল।’ (দারাকুতনি, হাদিস: ২৬৯৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার কবর জিয়ারত করবে, তার জন্য আমার শাফাআত (সুপারিশ) ওয়াজিব হয়ে যাবে।’ (দারাকুতনি, ২/২৭৮, বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, ৩৮৬২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বায়তুল্লায় হজ করল, অথচ আমার (কবর) জিয়ারত করল না, সে ব্যক্তি আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করল।’ (ইবন হিব্বান, ২/৪১৪; আল-মাউদুআত মিনাল আহাদিস আল-মারফুআত, হাদিস: ১১৬৮)
২. মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়: ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমার এ মসজিদে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে ১ হাজার নামাজ আদায় করার চেয়েও উত্তম।’ (বুখারি: ১১৯০; মুসলিম: ১৩৯৪)
৩. রিয়াজুল জান্নাহ: মসজিদে নববিতে ‘রিয়াজুল জান্নাহ’ নামক একটি বিশেষ স্থান রয়েছে, যাকে জান্নাতের টুকরা বলা হয়েছে। সেখানে ইবাদত করা অনেক ফজিলতপূর্ণ।
৪. সাহাবায়ে কিরামের কবর জিয়ারত: মদিনায় অনেক সাহাবি এবং ইসলামের প্রথম যুগের মহান ব্যক্তিত্বরা শায়িত আছেন। তাদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আমরা তাদের প্রতি সম্মান দেখাতে পারি এবং নিজেদের ঈমান মজবুত করতে পারি।
হজের অংশ না হলেও, মদিনায় যাওয়া একটি বরকতময় সফর যা ঈমান বাড়ায়, রাসুলের প্রতি ভালোবাসা জাগায় এবং অতিরিক্ত সওয়াবের দরজা খুলে দেয়।