শৈলকুপায় বাজার দখল ও পূর্বের শত্রুতার জেড় ধরে অতর্কিত হামলায় আহত ৬ জন।

মো. আব্দুস সামাদ, শৈলকুপা 

শৈলকুপায় বাজার দখল ও পূর্বের শত্রুতার জেরে ধরে অতর্কিত হামলায় আহত ৬ জন। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নে ফের রাজনৈতিক সহিংসতায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জনপদ। (১১মে) রবিবার রাত ৮ টার সময় কাঁচেরকোল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এক ভয়াবহ সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় জনবহুল অঞ্চলটি, সংঘর্ষে আহত হয় ৬ জন ।স্থানীয় সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, পরিকল্পিত এ হামলার পেছনে ছিলেন এলাকার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি।

কাঁচেরকোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক টিটন ও ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক এম ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বে এই হামলাটি চালানো হয়। প্রক্ষদোষী হিসেবে পরিচিত বিএনপির কর্মী শফিউল আলম ওরফে সোফলো মেম্বার (৪৫), বাদশা (৪০), জুলিয়াস (৪০), মিজানুর রহমান (৪০), মহির শেখ (৪০), ও বিপুল শেখ (৩৮)। অভিযোগ রয়েছে, তারা দলবদ্ধভাবে বিএনপির অন্য পক্ষের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন জামাল গ্রুপের নেতাকর্মীরা, অন্তত ৬ জন তাদের মধ্যে রয়েছেন নাছিম শেখ (৬৫), সুকুর শেখ (৪০), আল্লেক শেখ (২১) এবং মিলকু শাহ (৪৫), মিশন (২২) আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের একাধিকজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন কাঁচেরকোল ইউনিয়ন যুবদলের নেতা এ.বি.এম কামাল। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চুরমার করে ফেলে হামলাকারীরা। এছাড়াও ছাত্রদলের নেতৃস্থানীয় সদস্য মো. মিশন মিয়া, শরিফুল ইসলাম এবং শান্তা টেলিকম নামের প্রতিষ্ঠান ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিলকু শাহ নামক এক ব্যক্তিকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরে করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার জীবন এখনও সংকটাপন্ন। এলাকাবাসীর মতে, “এই মিলকু শাহ সহ প্রত্যেকে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছে। তারা সবসময় গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষায় লড়াই করেছেন।”

এলাকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই সহিংসতার পেছনে একটি হাইব্রিড রাজনৈতিক চক্র সক্রিয়, যারা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মিশ্রণে গঠিত। এদের মূল উদ্দেশ্য বিরোধী দলকে ধ্বংস করা।”

শৈলকুপা বাসীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। তারা বলেন,

“আমরা এই পরিকল্পিত সন্ত্রাস ও হামলার বিচার চাই। যারা দিনের পর দিন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের আড়ালে মানুষ হত্যা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

এই ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় থানার এক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, “অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্লেষকের মন্তব্য:
এই ঘটনাকে শুধু একটি রাজনৈতিক সহিংসতা বললে কমই বলা হয়। এটি একটি ভয়াবহ সামাজিক সংকেত। যেখানে গণতন্ত্রের চর্চার জায়গায় অস্ত্রের মুখ চলে এসেছে, সেখানে রাজনীতির ভবিষ্যৎ কতটা অন্ধকার, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Scroll to Top