ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: খুলনা বিভাগে ইসলামী জোট এবং বিএনপির আসন সম্ভাবনা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: খুলনা বিভাগে ইসলামী জোট এবং বিএনপির আসন সম্ভাবনা

শেখ জিল্লুর রহমান

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগে ইসলামী জোট এবং বিএনপির আসন সম্ভাবনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে ২০২৬ সালের খুলনা বিভাগীয় নির্বাচন এই অঞ্চলের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর জন্য এক নতুন পরীক্ষা। এই বিশেষজ্ঞ-স্তরের বিশ্লেষণে খুলনা বিভাগের ৩৬টি সংসদীয় আসনের নির্বাচনী ফল নিয়ে পরিমাণগত ও গুণগত বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যা দুটি মূল শর্তের উপর ভিত্তি করে: প্রথমত, আওয়ামী লীগের নির্বাচন থেকে অনুপস্থিতি এবং দ্বিতীয়ত, ইসলামী দলগুলোর, প্রধানত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে, পূর্ণাঙ্গ আসন সমঝোতা। এই প্রতিবেদনটি ঐতিহাসিক ভোট ব্যাংক, আদর্শিক প্রবণতা এবং আওয়ামী লীগের ভোট স্থানান্তরের দুটি ভিন্ন দৃশ্যের অধীনে ইসলামী দলগুলোর এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মধ্যে সম্ভাব্য আসন ভাগাভাগি প্রক্ষেপণ করে। খুলনা বিভাগ ঐতিহ্যগতভাবে ধর্মীয় রক্ষণশীলতা এবং তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য পরিচিত, যেখানে জামায়াতে ইসলাম বা ইসলামী জোট একটি প্রান্তিক দল নয়, বরং একটি ‘কোর ফোর্সেস’ হিসেবে স্থানীয় রাজনীতিতে গভীর শিকড় গেড়েছে।

ঐতিহাসিক ভিত্তি এবং ইসলামী জোটের শক্তি কেন্দ্র

খুলনা অঞ্চলে জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক শক্তি নিরূপণ করার জন্য ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনগুলির ভোট বিশ্লেষণ অপরিহার্য। এই বিশ্লেষণ দেখায় যে জামায়াতে ইসলামী, যা এই অঞ্চলের ইসলামী জোটের মেরুদণ্ড, এককভাবে বহু আসনে ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ ভোট পেয়েছে, যা প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। কিছু আসন জামায়াতে ইসলামীর ‘কোর শক্তি ঘাঁটি’ হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে জোটবদ্ধতা ছাড়াই তারা বিজয়ী হয়েছিল বা অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে ছিল। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের অংশ হিসেবে জামায়াত খুলনা-৬ (কয়রা, পাইকগাছা), যশোর-২, এবং সাতক্ষীরার চারটি আসনেই (সাতক্ষীরা-১, ২, ৩, ৪) সরাসরি জয় লাভ করে। এই পরিসংখ্যানগুলি সুস্পষ্টভাবে দেখায় যে কিছু নির্দিষ্ট আসনে ইসলামী জোটের ভোট ব্যাংক প্রধান দলগুলোর চেয়েও বেশি শক্তিশালী। এই কোর আসনগুলি আসন্ন আসন সমঝোতায় ইসলামী জোটের আসন পাওয়ার জন্য মূল ভিত্তি তৈরি করবে।

১৯৯১ নির্বাচনে জোট ছাড়াই খুলনাতে জামায়াতের ৮ আসন লাভ

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো আনুষ্ঠানিক প্রাক-নির্বাচনী জোটে না গিয়েই এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই নির্বাচনে দলটি তাদের সংসদীয় ইতিহাসের সেরা ফলাফল অর্জন করে, সারাদেশে মোট ১৮টি আসনে জয়লাভ করে।

দলটি প্রায় ১২.১৩% ভোট পেয়েছিল। নির্বাচনের ফলাফলে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জামায়াতের এই আসনগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে, জামায়াতে ইসলামী বিএনপিকে সরকার গঠনে সমর্থন জানায়, যার ফলে বিএনপি সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়।

১৯৯১ সালের ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত খুলনা বিভাগে তাদের ইতিহাসের সেরা ফলাফল অর্জন করে। দলটি এই অঞ্চল থেকে মোট ৮টি আসনে জয়লাভ করে।
খুলনা-৬: অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, বাগেরহাট-৪: মাওলানা মুফতি আব্দুস সাত্তার, সাতক্ষীরা-১: অ্যাডভোকেট শেখ আনসার আলী, সাতক্ষীরা-২: কাজী শামসুর রহমান, সাতক্ষীরা-৩: মাওলানা এএসএম রিয়াসত আলী, সাতক্ষীরা-৪: গাজী নজরুল ইসলাম, যশোর-৪: মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, চুয়াডাঙ্গা-২: মাওলানা হাবিবুর রহমান, এছাড়া ২০০১ আরো কিছু আসন জামায়াত পায় খুলনা-৫ ও যশোর-২। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনগুলিতে জামায়াতের উচ্চ সম্ভাবনাই বেশি। একই সঙ্গে ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনটিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের ঐতিহাসিক ও সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে দেখে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলেও, জামায়াতের একক প্রার্থী পেয়েছিলে ৮১,৭৩৯ ভোট, যা এই অঞ্চলে তাদের অদম্য শক্তি প্রমাণ করে। এই ফলাফল ১৯৯৬ সালের ভোটপ্রাপ্তি (৫৬,৪৫৮) থেকে প্রায় ৪৫% বেশি। আওয়ামী লীগের মোট ভোটের মাত্র ৪০% সুইং করলেই জামায়াতের প্রার্থীরনিশ্চিত জয়’ । ঝিনাইদহ-২ আসনে নুর মোহাম্মদ ৪১,২৪৭ ভোট পেয়েছিলেন। এই আসনে জয়ী হতে হলে অতিরিক্ত ভোটের প্রয়োজন। আমার অনুমান অনুযায়ী, যদি আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকের ৬০% জামায়াতের পক্ষে যায়, তবে এই আসনে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে এবং এটি উচ্চ সম্ভাবনাময় আসন। বাগেরহাট-৩ আসনে গাজী আবু বকর সিদ্দিক ৩৪,৩২১ ভোট পেয়েছিলেন। জামায়াতের নিজস্ব ভালো ভিত্তি এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশের সমর্থন পেলে এই আসনে জয়ের সম্ভাবনা খুব বেশি থাকবে, যা একটি উচ্চ সম্ভাবনাময় ফল দেবে। যশোর-১ আসনে জামাত নুর হোসেন ৩২,২৯৪ ভোট পেয়েছিলেন। এটি তুলনামূলকভাবে কম জামায়াত ভোটের আসন। তবে, যদি বিএনপি এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং আওয়ামী লীগের বড় অংশ (৬০%) জামায়াতের দিকে আসে, তবে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর জয় আসতে পারে, তাই এটি একটি মাঝারি সম্ভাবনার আসন। কুষ্টিয়া-২ আসনে আব্দুল ওয়াহেদ ৩০,৬৩২ ভোট এবং কুষ্টিয়া-৩ আসনে মো. আনিসুর রহমান ৩০,৯৮৩ ভোট পেয়েছিলেন। এই আসনগুলিতে জামায়াতের জয় নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের ভোটের বৃহত্তর অংশের (৫০% বা তার বেশি) সরাসরি জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে সুইং হওয়ার উপর। অন্যথায়, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কুষ্টিয়া-৩ এ ১৯৯৬ সালে ভোট কম ছিল এবং বড় সুইং জরুরি। তাই উভয় আসনেই মাঝারি সম্ভাবনা রয়েছে।

আদর্শিক ও সমাজতাত্ত্বিক পরিবর্তনশীলতা

বর্তমানে জনগণের মধ্যে ইসলামী আদর্শের চেতনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইসলামী দলগুলির ভোট ব্যাংক সমৃদ্ধ হয়েছে। এই প্রবণতাটি আদর্শিক এবং সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা জরুরি, বিশেষত নারী ও ইসলামপ্রিয় তরুণ ভোটারদের মধ্যে এবং আওয়ামী লীগ বা বিএনপি পরিবার থেকে দলত্যাগের মাধ্যমে। আগামী নির্বাচনে প্রায় ৪৫ লাখ নতুন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এই তরুণ প্রজন্ম ঐতিহ্যবাহী দলীয় আনুগত্য থেকে সরে এসে সুশাসন এবং আদর্শিক স্থিতিশীলতার মতো বিষয়গুলিতে গুরুত্ব দেয়। ইসলামী জোট তাদের ‘আল্লাহর আইন চাই সৎ লোকের শাসন চাই’ স্লোগানের মাধ্যমে নিজেদেরকে প্রচলিত রাজনীতির বাইরে একটি নৈতিকভাবে দৃঢ় বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। একইভাবে, গ্রামীণ এবং মফস্বল এলাকার রক্ষণশীল নারী ভোটারদের সমর্থন বৃদ্ধিও ইসলামী জোটের জন্য সহায়ক, যা গ্রামীণ সামাজিক কাঠামোর প্রতিফলন। এই প্রবণতা ইসলামী জোটকে কেবল আদর্শিক শক্তিই নয়, একটি স্থিতিশীল পারিবারিক ভোট ব্যাংকও সরবরাহ করছে।

মডেলিংয়ের ভিত্তি এবং ভোট স্থানান্তরের মেকানিজম

আওয়ামী লীগ নির্বাচন থেকে সরে গেলে, তাদের ঐতিহাসিক ভোট ব্যাংক দুটি প্রধান ধারায় বিভক্ত হবে। প্রথমত, ইসলামী জোটে স্থানান্তরের কারণ: আওয়ামী লীগের যে সকল ভোটার গ্রামীণ বা আধা-শহুরে এলাকায় বসবাস করেন এবং সামাজিক ও ধর্মীয় রক্ষণশীলতার প্রতি দুর্বল, তারা ইসলামী জোটকে সমর্থন করবেন। এই আদর্শিক স্থানান্তর আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্যদের ইসলামী জোটে যুক্ত হওয়ার কারণে আরও জোরালো হবে। দ্বিতীয়ত, বিএনপিতে স্থানান্তরের কারণ: আওয়ামী লীগের শহুরে এবং মধ্যবিত্ত ভোটাররা, যারা ধর্মনিরপেক্ষ বা প্রতিষ্ঠানবিরোধী দলকে সমর্থন করতে চায়, তারা বিএনপির দিকে যাবে। এই ভোটারদের কাছে বিএনপি সরকারের পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে। এই ভোট স্থানান্তরের হারই চূড়ান্ত ফল নির্ধারণ করবে।

আওয়ামী ভোটের নিম্ন স্থানান্তর মডেল

এই মডেলে, আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংককে আদর্শিক কারণে ইসলামী জোটের দিকে ৪৫ শতাংশ এবং কৌশলগত কারণে বিএনপির দিকে ৫৫ শতাংশ স্থানান্তরিত হওয়ার অনুমান করা হয়েছে। এই দৃশ্যকল্পে বিএনপি সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে (আনুমানিক ২৪-২৬টি আসন)। আওয়ামী লীগের ভোটের বড় অংশ বিএনপিতে যুক্ত হওয়ায়, বিএনপি তাদের ঐতিহ্যবাহী ঘাঁটি (যেমন কুষ্টিয়া-১, মাগুরা-১, নড়াইল-১) ছাড়াও অনেক মিশ্র ভোটার অধ্যুষিত আসনগুলিতে জয়ী হবে। ইসলামী জোট তাদের শক্তিশালী কোর ঘাঁটিগুলিতে ( যেমন সাতক্ষীরার ৩-৪টি, খুলনার ২-৩টি) জয়ী হবে, কিন্তু এই স্থানান্তর হার তাদের ‘সুইং আসন’গুলিতে জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে না। ইসলামী জোট এই মডেলে আনুমানিক ১০-১২টি আসন লাভ করবে।

আওয়ামী ভোটের উচ্চ স্থানান্তর মডেল

এই দৃশ্যকল্পটি ইসলামী আদর্শিক চেতনার সর্বোচ্চ বৃদ্ধি এবং ইসলামী দলগুলোর সাংগঠনিক সক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রতিফলন হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের ভোটের ৬৫ শতাংশ ইসলামী দলগুলোর দিকে এবং ৩৫ শতাংশ বিএনপির দিকে স্থানান্তরিত হওয়ার অনুমান করা হয়েছে। এই উচ্চ স্থানান্তর মডেল খুলনা অঞ্চলের নির্বাচনী মানচিত্রে নাটকীয় পরিবর্তন আনবে। ইসলামী দলগুলো কেবল তাদের কোর ঘাঁটিগুলিতেই নয়, অনেক ঐতিহ্যবাহী বিএনপি-কেন্দ্রিক এবং তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ‘সুইং আসন’গুলিতেও বিজয়ী হবে। এই মডেল অনুযায়ী, ইসলামী দলগুলো প্রথমবারের মতো খুলনা বিভাগে আসন সংখ্যায় বিএনপির চেয়ে বেশি আসন অর্জন করতে পারে (আনুমানিক ১৮-২২টি আসন)। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, ইসলামী জোট যদি আওয়ামী লীগের গ্রামীণ রক্ষণশীল ভোটকে ব্যাপকভাবে একীভূত করতে পারে, তবে তারা একটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হতে পারে, যেখানে বিএনপি প্রায় ১৪-১৮টি আসন লাভ করবে। যশোর-১ এবং ঝিনাইদহ-৩-এর মতো সুইং আসনগুলির ফলাফল এই দৃশ্যকল্পে ইসলামী জোটের পক্ষে যাবে।

উভয় দৃশ্যকল্পের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, নিম্ন স্থানান্তর মডেলে বিএনপি শক্তিশালীভাবে আধিপত্য বিস্তার করবে, যেখানে উচ্চ স্থানান্তর মডেলে ইসলামী দলগুলো একটি প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে। ইসলামী দলগুলোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তাদের গ্রামীণ ও ধর্মীয়ভাবে সংবেদনশীল আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আকর্ষণ করার ক্ষমতার উপর। আসন জেতার ক্ষেত্রে, ইসলামী দলগুলোর শক্তি অত্যন্ত বেশি, কারণ তারা কমপক্ষে ৮ থেকে ১০টি আসনে জয়ের গ্যারান্টি দিতে পারবে।

কৌশলগত ঝুঁকি বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই বিশ্লেষণ দুটি চরম দৃশ্যকল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি হলেও, বাস্তবে আওয়ামী লীগের ভোটের স্থানান্তর হার সম্ভবত মধ্যবর্তী অবস্থানে (৫০-৫৫) শতাংশ স্থির থাকবে। যদি এমনটি হয়, তবে ইসলামী জোট এবং বিএনপি উভয়েই প্রায় ১৬ থেকে ২০টি করে আসন পেতে পারে, যা খুলনা বিভাগে একটি সুষম ক্ষমতার বন্টন তৈরি করবে। তবে, বিএনপি এবং ইসলামী জোটের বাহিরে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর উত্থান এবং তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি সামগ্রিক জয়ের সম্ভাবনাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ইসলামী দলগুলোর জন্য কৌশলগত সুপারিশ হলো, তাদের ‘ঐক্য’ শুধু জামায়াত বা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, বৃহত্তর আদর্শিক কাঠামোর রূপ দেওয়া এবং সুইং আসনগুলিতে নিবিড় সাংগঠনিক বিনিয়োগ নিশ্চিত করা।

লেখক: সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আরো পড়ুন
ঝিনাইদহে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা
আরো পড়ুন
এবার নদী ও খাল সংস্কার করাই হোক ঝিনাইদহের নির্বাচনী ইশতেহার
আরো পড়ুন
কাপলান থেকে বায়ারা আক্তারটিবি-২ ড্রোন
আরো পড়ুন
ইরান বিভিন্ন ক্ষেত্রে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণে শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। ১৯৭৯ সালের ইরানি জিম্মি সংকট, ১৯৮০ সালের অপারেশন ঈগল ক্ল, এবং ইসরায়েলের পারমাণবিক নথি তেহরানে চলে যাওয়া - এই ঘটনাগুলো ইরানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দুর্বলতা এবং ব্যর্থতার উদাহরণ। এই সব ঘটনায় ইরান বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে. ইরানের গোয়েন্দা ব্যর্থতার উদাহরণ: **ইরান জিম্মি সংকট (Iran Hostage Crisis): ১৯৭৯ সালে তেহরানে ৬৬ জন মার্কিন নাগরিককে জিম্মি করে রাখা হয় এবং তাদের মধ্যে ৫২ জনকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জিম্মি করে রাখা হয়। এই সংকট ইরানি বিপ্লবের পর দেখা দেয়। এই সংকট ছিল একটি আন্তর্জাতিক সংকট, যেখানে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের দুর্বলতা এবং ব্যর্থতা প্রমাণ করে. **অপারেশন ঈগল ক্ল (Operation Eagle Claw): ১৯৮০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জিম্মিদের উদ্ধারের জন্য একটি অভিযান চালায়, যা অপারেশন ঈগল ক্ল নামে পরিচিত। এই অপারেশনে দুটি হেলিকপ্টার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এগিয়ে যেতে পারেনি এবং একটি ধূলিঝড়ের কারণে দৃশ্যমানতা হ্রাস পায়। এই কারণে পুরো দলটিকে দেরিতে অবতরণ করতে হয় এবং অভিযানটি ব্যর্থ হয়. **ইসরায়েলের পারমাণবিক নথি তেহরানে চলে যাওয়া: সম্প্রতি ইসরায়েলের পারমাণবিক স্থাপনার নথি তেহরানে চলে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনা ইরানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার আরও একটি উদাহরণ, যেখানে তাদের দুর্বলতার কারণে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে. **ইসরাইলের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি: কিছু তথ্য থেকে জানা গেছে যে, ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই তথ্য ইরানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দুর্বলতা এবং ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়. এই সব ঘটনা প্রমাণ করে যে, ইরানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের কাজ সঠিকভাবে করতে পারেনি এবং তাদের দুর্বলতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হয়েছে। এই দুর্বলতার কারণে ইরান বিভিন্ন ক্ষেত্রে শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে.
আরো পড়ুন
জম্মু-কাশ্মিরে
আরো পড়ুন
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটি
আরো পড়ুন
Scroll to Top