মোঃ মাসুদ রানা, কালীগঞ্জ
কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের জানালা ভেঙে ৩ লাখ টাকা চুরি। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে ফের ঘটল বড় ধরনের চুরির ঘটনা। বুধবার গভীর রাতে অজ্ঞাত চোরেরা অফিস সহকারী তপন কুমার রায়ের কক্ষের পিছনের জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলমিরার ড্রয়ার ভেঙে প্রায় তিন লাখ টাকা নিয়ে যায়। এসময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাহত করতে তারা অফিসের একটি সিসি ক্যামেরাও ভেঙে ফেলে।
বৃহস্পতিবার সকালে অফিসের প্রসেস সার্ভার ইমদাদুল হক ঘটনাটি কালীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ঘটনার পর দায়িত্বে থাকা তিনজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। জনবল সংকটের কারণে অফিস সহকারী তপন কুমার রায় অর্পিত সম্পত্তি ও নাজিরের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছিলেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে—বুধবার বিকেল ৫টার দিকে অফিস বন্ধ করে সবাই বের হয়ে যান। পরদিন সকাল ৯টার দিকে অফিসে এসে দেখা যায়, তপন কুমার রায়ের কক্ষটির দরজা ভেতর থেকে লক করা অবস্থায় রয়েছে। বারবার চেষ্টা করেও দরজা খোলা সম্ভব হয়নি। পরে অফিস ভবনের পিছনে গিয়ে দেখা যায় জানালার গ্রিল ভাঙা। বিষয়টি ভূমি কর্মকর্তাকে জানানো হলে কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায় আলমিরার ড্রয়ার ভেঙে নগদ প্রায় তিন লাখ টাকা চুরি করা হয়েছে।
ঘটনার রাতে দায়িত্বে থাকা নাইটগার্ড আরজু আহম্মেদ বলেন, “আমি কিডনি রোগী, ওষুধ খেলে ঘুম আসে। রাত ২টার পর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে অফিসের প্রধান ফটক খুললেও তপন কুমার রায়ের কক্ষ খুলছিল না। এরপরই আমরা বুঝতে পারি, চুরি হয়েছে।”
অফিস সহকারী তপন কুমার রায় বলেন, “প্রতিদিনের মতো অফিস বন্ধ করে বাড়ি গিয়েছিলাম। সকালে এসে দেখি কক্ষের দরজা ভেতর থেকে লক। পরে পিছনে গিয়ে দেখি জানালা ভাঙা। বুঝতে পারি বড় ধরনের চুরি হয়েছে।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “চুরির ঘটনায় জিডি হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। আশা করছি দ্রুতই ঘটনার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহিন আলম বলেন,
“চুরির ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অফিস সহকারী তপন কুমার রায়, নাইটগার্ড শহিদুজ্জামান ও আরজু আহম্মেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তদন্ত চলছে।”
উল্লেখ্য, এর আগেও কালীগঞ্জ ভূমি অফিসে ড্রয়ার ভেঙে এক লাখ টাকা, জানালা ভেঙে ৮০ হাজার টাকা এবং একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। তবে তখনকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।