কোলাবাজারে বেগবতী নদীর সেতু দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণাধীন: জীবন-জীবিকার পথে বিপর্যয়

কোলাবাজারে বেগবতী নদীর সেতু দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণাধীন: জীবন-জীবিকার পথে বিপর্যয়

বনি আমিন, কালীগঞ্জ:

কোলাবাজারে বেগবতী নদীর সেতু দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণাধীন: জীবন-জীবিকার পথে বিপর্যয়। ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়ন, এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলার , শিকারপুর, মুনুড়িয়া, বামনাইল, বুঝিতলা-নারায়ণপুর, সহ আশেপাশের আরো অনেক এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজারেরও বেশী মানুষ প্রতিদিন শহরমুখী কাজ, চিকিৎসা, পড়াশোনা ও কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য নির্ভর করে কোলাবাজার সেতুর উপর।

বেগবতী নদীর দুই প্রান্তে কোলা ইউনিয়ন ও জামাল ইউনিয়নের প্রধান এই সংযোগ সেতুটি বহুদিন ধরে নির্মাণাধীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই সেতুটি না থাকায় বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে একটি ভঙ্গুর কাঠের সাঁকো, যা বর্ষা এলেই নদীর স্রোতে তলিয়ে যায় বা ভেঙে পড়ে। এতে করে প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচলে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ, কখনো কখনো যা মৃত্যুঝুঁকিতে রূপ নেয়। সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় রোগী পরিবহনের সময় নদীর পাড় পর্যন্ত গিয়েও কাঠের সাঁকো পার হতে পারে না। ফলে জরুরি রোগীকেও তুলে নিয়ে যেতে হয় কাঁধে বা ভ্যান ঠেলে, যেখানে প্রতিটি সেকেন্ডই জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য তৈরি করে। শিশুরাও প্রতিদিন স্কুলে যেতে গিয়ে স্রোতের জলে ভিজে, খালি পায়ে বইয়ের ব্যাগ হাতে করে অস্থায়ী সেই সাঁকো পার হয়, যা অভিভাবকদের কাছে এক একটি দুঃস্বপ্ন।

কৃষিপ্রধান এই অঞ্চলের চাষিরাও মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ধান, সবজি, অন্যান্য কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারে পৌঁছাতে না পারায় তারা প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। কাদায় আটকে পড়ে মালভর্তি ভ্যান বা ঠেলা গাড়ি, অনেক সময় নষ্ট হয় পুরো পণ্য। বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে না। অথচ প্রতিদিন হাজারো মানুষের জীবন এই সেতুর উপর নির্ভরশীল। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের কোনো অগ্রগতি নেই, নেই দায়িত্বশীলদের তদারকি। ফলে এখন তাদের মনে আর আশার আলো নেই, আছে শুধু ক্ষোভ, ক্লান্তি ও একটিই প্রশ্ন—“আমরা কি আর মানুষ না?”

Scroll to Top