কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মাঝেমধ্যে সাপে কাটা রোগীর কবিরাজিও করতেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বেদেপল্লির সাপুড়ে রওশন আলী (৫০)। ৩০ বছর ধরে সাপ নিয়ে খেলা দেখাতেন, বনজঙ্গলে সাপ ধরতেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে তিনি সেই সাপের কামড়েই মারা গেছেন।
রওশন আলী কালীগঞ্জ পৌরসভার কাশিপুর বেদেপল্লির আজগার আলীর ছেলে। গত বুধবার রাতে পার্শ্ববর্তী চাঁচড়া মাঠে সাপ ধরতে গেলে একটি বিষধর সাপ তাঁর হাতে কামড় দেয়। সাপের কবিরাজি করলেও সাপে কাটার পর তিনি নিজেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে বলেন। রাতেই স্বজনেরা তাঁকে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে যশোর ২৫ শয্যা হাসপাতালে নেন। বৃহস্পতিবার ভোররাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রওশন আলী।
বেদেপল্লির আরেক সাপুড়ে হাকিম মিয়া জানান, সাপ ধরতে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নেননি রওশন আলী। যে কারণে সাপে কামড়ালেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা মনির উদ্দিন জানান, বুধবার রাতে মাঠ থেকে এক ব্যক্তি ফোন করেছিলেন সাপ ধরার জন্য। সংবাদ পেয়ে রওশন আলী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাত ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী চাঁচড়া মাঠের একটি ড্রাগন ফলের বাগানে সাপ ধরার সময় অসাবধানতার কারণে বিষধর সাপ রওশন আলীর হাতে কামড় দেয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে ওঝার কাছে নিয়ে যেতে চাইলে রওশন আলী বাড়ি চলে আসেন। পরে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখান থেকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তিনি মারা যান।
মনির উদ্দিন আরও জানান, রওশন আলী দীর্ঘ ৩০ বছর এই সাপুড়ে পেশায় ছিলেন। তাঁর বাবা আজগার আলীও সাপ নিয়ে খেলা করেছেন। যে সাপ তাঁদের কর্মজীবনের সঙ্গী, সেই সাপের কামড়েই রওশন আলী মারা গেলেন। জানাজা শেষে বেদেপল্লির কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, ‘লোকমুখে জেনেছি, সাপের কামড়ে একজন সাপুড়ে মারা গেছেন।’