সাইফুল ইসলাম ঝিনাইদহ–
ঝিনাইদহে কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান, মাদক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ। ঝিনাইদহ জেলার পাড়া-মহল্লায় ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মাদক। এর ফলে গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং, ভেঙে পড়ছে সামাজিক কাঠামো। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মনজুর মোরশেদ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
সভায় বক্তারা বলেন, শহর থেকে গ্রাম—সবখানে মাদকের অবাধ প্রবাহ চলছে। অথচ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যত নিষ্ক্রিয়। তারা ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিয়মিত ও শক্তিশালী অভিযান না চালানোর কারণে প্রতিনিয়ত বিস্তার ঘটছে মাদকের।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, শহরের ঝিনুকমালা আবাসন, খাঁজুরা আমবাগান, পবহাটি কলাবাজার, আরাপপুর ব্রিজ, ষাটবাড়িয়া, কাঞ্চননগর চার রাস্তার মোড়, চাকলাপাড়া, হামদহ বাইপাস, বৌ বাজার, শাপলা চত্বর, সরকারি বালক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে শুরু করে পলিটেকনিক কলেজ ও বিসিক এলাকা পর্যন্ত অসংখ্য স্থানে নিয়মিত মাদক কেনাবেচা চলছে। কিছু কিছু স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা নির্ভয়ে মাদক বিক্রি করছে, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
বক্তব্য দেন জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি আসিফ কাজল, চেম্বার সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, বিএনপি নেতা আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, জামায়াত নেতা আব্দুল আওয়াল, অ্যাডভোকেট হুমায়ুন বাবর ফিরোজ, সাবেক কাউন্সিলর বুলবুলি খাতুনসহ আরও অনেকে। তারা বলেন, “মাদক এখন শুধু ব্যক্তিকে নয়, গোটা সমাজকে ধ্বংস করছে।”
জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানান, মাদক নির্মূলে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। মাদকের স্পট ও কারবারীদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তারা। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট আরও জোরালোভাবে পরিচালনা করা হবে বলে আশ্বাস দেন।