ঝিনেদার কাগজ || Jhenedar kagoj || সত্যের আলোয় সুন্দর

১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
কালীগঞ্জ ফেমাস মেরিট কেয়ার একাডেমি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চালন্দা গিরিপথ

চালন্দা গিরিপথ

ডেস্ক রিপোর্ট

পার্বত্য চট্টগ্রাম সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবসময় অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের অপূর্ব সম্মোহনে কাছে টেনে নেয়। প্রকৃতির নিপুণ হাতে সাজানো পাহাড়-অরণ্যে ঘেরা চট্টগ্রামের এক বৈচিত্র্যময় ভ্রমণ গন্তব্যের নাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ১৭৫৩ একর আয়তনের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আছে বিভিন্ন রোমাঞ্চকর স্থান। চালন্দা গিরিপথ তেমনি এক অসাধারণ অ্যাডভেঞ্চারপূর্ণ জায়গা।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

চালন্দা গিরিপথের প্রতিটি পদক্ষেপে অদ্ভুত শিহরণ-জাগানিয়া রোমাঞ্চ অনুভব করা যায়। চারদিকের সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে স্বচ্ছ পানির ধারা মনকে প্রশান্ত করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ঝুপড়ির পাশের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনার উৎপত্তিস্থল বা ছড়ার পানি ধরে পশ্চিম দিকে ঘণ্টাখানিক হেঁটে গেলে প্রাকৃতিক বিস্ময় চালন্দা গিরিপথের দর্শন পাওয়া যায়। গিরিপথের ভেতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে হিমশীতল অনুভূতি শরীরকে ছুঁয়ে যায়। দুই পাহাড়ের মাঝখানে প্রকৃতির তৈরি রাস্তায় এগিয়ে যেতে সমানভাবে হাত-পায়ের ব্যবহার করতে হয়। পাহাড়ের ঢালে ঢালে প্রকৃতির বর্ণিল চিত্র যেন অজানা রহস্যের গোলকধাঁধা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের পাশে ঝুপড়ি। পেছনেই ছড়া। এই ছড়ার পানি দিয়ে হাঁটতে হবে। হাঁটা সহজ না। কাদা, পানি- কখনো পা ফসকে যাওয়ার ভয়। ৫০ মিনিট হাঁটার পর ছড়ার বামে বা দক্ষিণে চোখে পড়বে পথটা। এটাই চালন্দা গিরিপথ। পাশাপাশি দুটি পথ। একটি চালন্দার দিকে গেছে, অন্যটি সীতাকুণ্ডের দিকে। তাই ঠিক পথের ধারণা না থাকলে সীতাকুণ্ড চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

গিরিপথের পাহাড়ের গা বেয়ে নামছে পানি। কোথাও ভেজা, কোথাও শুকনো। গিরির ভেতরে ঢুকতেই শরীরটা কেমন যেন হিমশীতল হয়ে ওঠে। দুই পাহাড়ের মধ্যে হাত ও পায়ের সমন্বয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দুই পাশে পাহাড়ের খাঁজ। কোথাও পাহাড়ের খাঁড়া ঢাল বেয়ে যেন নেমেছে রোদ। খাঁজে খাঁজে রোদের বর্ণিল চিত্র।

কোথাও কুয়াশার মতো আবছা আঁধার। তবে এসবের ভেতরেও কানে আসবে পাখির কিচিরমিচির। গিরিপথে প্রায় আধ কিলোমিটার ঝুঁকিহীনভাবে যাওয়া যায়। কিন্তু আরেকটু ভেতরের দিকে যেতেই দেখা দেবে ভয়। মনে হবে একটা ভূতুড়ে পরিবেশে এসে পড়েছেন। পথচলাও কঠিন হয়ে পড়বে। ক্রমেই বাড়বে ঝুঁকি। একটু অসতর্ক হলে ঘটতে পারে বড় রকমের বিপদ। তাই চলতে হবে বেশ সাবধানে।

এখন এই গিরিপথে অনেকেই আসেন। কিন্তু চালন্দা নামটি খুব বেশি দিন আগের নয়। যারা পথের নামকরণ করেছেন, তাদের একজন মইনুল ইসলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১০-১১ সেশনের ছাত্র মইনুল বলেন, ২০১১ সালে আমরা ১১ বন্ধু ক্যাম্পাস থেকে পাহাড় দিয়ে হেঁটে ভাটিয়ারী যাওয়ার পরিকল্পনা করি। যাওয়ার সময় একজন কৃষক ছড়া দিয়ে আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যান। এক সময় চোখে পড়ে একটি ছোট সরু জায়গা দিয়ে ঠাণ্ডা পানি আসছে। সেই ঠাণ্ডা পানির খোঁজে আমরা ঝোপের ভেতর ঢুকে পড়ি। দেখি ঠাণ্ডা হিম হিম বাতাস এবং আঁধারে ছাওয়া এই গিরিপথ। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। ভেতরে যত যাই, ততই মুগ্ধ হই। পরে ভারতের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যালয়ের সঙ্গে চ যোগ করে ‘চালন্দা’ নামকরণ করি। এই নামটা আসার কারণ আছে। আমরা ইতিহাসের ছাত্র। ভারতের প্রাচীন ইতিহাস পড়ার সময় স্যার বারবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতেন। নামটা মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে একদিন একটা ছবি ফেসবুকে আপলোড করি। বেশ সাড়া পড়ে। এর পর সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে চবির এই চালন্দা গিরিপথ।’

কীভাবে যাবেন

চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে বাস অথবা সিএনজিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া যায়। অথবা চট্টগ্রামের বটতলী রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে চড়ে ক্যাম্পাসে আসা যায়। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে এসে সেখান থেকে টমটমে করে কলা অনুষদের ঝুপড়িতে চলে যান। ঝুপড়ি হতে ৭-৮ মিনিট হাঁটার পরই পানির ছড়া পাবেন। ছড়া ধরে ঘণ্টাখানেক হাঁটলেই চালন্দা গিরিপথে পৌঁছে যাবেন।

কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রামের মানুষ অতিথিপরায়ণ। যারা চট্টগ্রামে ঘুরতে আসেন, তারা চাইলেই আত্মীয়ের বাড়িতে উঠতে পারেন। এতে সাশ্রয় হয় বটে। কারণ চট্টগ্রামে ২ স্টার হোটেলে উঠলেও খাওয়া-দাওয়াসহ জনপ্রতি দৈনিক ২ হাজার টাকা খরচ হবে। ২ স্টার নিচেরগুলো থাকার উপযোগী নয়। তবে যাদের একটু সামর্থ্য আছে তাদের হোটেলে ওঠাই ভালো। মধ্যবিত্তরা ২৫০০ টাকার মধ্যে চট্টগ্রামের জিইসি ও আর নিজাম রোডের রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ার হোটেল এম্বাসাডরে উঠবেন। ২৫০০ টাকার মধ্যে সিংগেল বেডের রুম এবং ৩২০০ টাকার মধ্যে ডাবল বেডের রুম পাবেন। বাজেট আরেকটু বেশি থাকলে একই স্থানে হোটেল ওয়েল পার্কে উঠতে পারেন। তবে এখানে খাবার খুবই এক্সপেন্সিভ। চট্টগ্রামের জিইসি এরিয়াটা ঢাকার গুলশান-বনানীর মতো। পেনিনসুলা হোটেলে উঠতে পারেন। এটা ৪ তারকা হোটেল। এই হোটেলের রুফটপে আড্ডা দেওয়া যায়। পরিবেশ, বিহেভিয়ার, ফুড কোয়ালিটি ১০/১০। জিইসি ছাড়া অন্যান্য এলাকায় থাকার হোটেল আছে। কিন্তু পরিবেশ অত উন্নত না। স্টেশন রোড, জিইসি মোড় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল স্টার পার্ক, হোটেল ডায়মন্ড পার্ক, হোটেল মিসখা, হোটেল হিল টন সিটি, এশিয়ান এসআর হোটেল, হোটেল প্যারামাউন্ট, হোটেল সাফিনা ও হোটেল সিলমন উল্লেখযোগ্য।

খাওয়া-দাওয়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভাতঘর, ঢাকা হোটেল, মওয়ের দোকানসহ বেশকিছু সুলভমূল্যে খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। চাইলে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে এসেও প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পারবেন।

সতর্কতা

চালন্দা গিরিপথ ভালো দর্শনীয় স্থান হলেও,

এখানে ঘুরতে এসে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই

ছিনতাইয়ের শিকার হন। এখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ঠিকমতো কাজ করে না। তাই

নিরাপত্তার স্বার্থে দুর্গম এ এলাকায় শিক্ষার্থীদের না যাওয়াই ভালো। অথবা অনেকজন একসঙ্গে যাওয়া উচিত।

প্রয়োজনীয় ভ্রমণ পরামর্শ

ছড়ার পানি ধরে যাওয়ার সময় দুটি পথ পাবেন। এদের মধ্যে একটি চালন্দায় যাওয়ার পথ এবং অন্যটি সীতাকুণ্ড যাওয়ার পথ। তাই সঠিক পথে যাচ্ছেন কি না এ ব্যাপারে সজাগ থাকুন। দলগতভাবে ভ্রমণ করুন এবং চলাচলের সময় প্রত্যেকে লাঠি ব্যবহার করুন। অনেক উপকার পাবেন। নিজেদের সঙ্গে শুকনো খাবার ও প্রয়োজনমতো পানি বহন করুন। কোনো প্রকার ময়লা ফেলে গিরিপথ নোংরা করবেন না।

চট্টগ্রামের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম। পাহাড় ও সমুদ্রে ঘেরা চট্টগ্রাম জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। তাই চট্টগ্রাম জেলাকে প্রাচ্যের রানি হিসেবে ডাকা হয়।

চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, ফয়’স লেক, ওয়ার সিমেট্রি, ভাটিয়ারী লেক, ডিসি হিল, বাটালি হিল, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, চন্দ্রনাথ পাহাড়, বাঁশখালী ইকোপার্ক, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, বাঁশখালী চা-বাগান, মহামায়া লেক, মহুরি প্রজেক্ট, খৈয়াছড়া ঝরনা, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত, পারকি সমুদ্রসৈকত ও সন্দ্বীপ ইত্যাদি।

আরও পড়ুন

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫: জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র

নবম অধ্যায়: উদ্ভিদ শরীরতত্ত্ব  Thank you for reading this post, don’t forget to subscribe! তৃতীয় পরিচ্ছেদ: সালোকসংশ্লেষণ সুনির্মল চন্দ্র বসু সহকারী

অসত্য, অবিচার ও অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে ইসলামী আন্দোলনই একমাত্র পথ: মাও. আব্দুল হালিম

বনি আমিন, কালীগঞ্জ: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার আয়োজনে প্রাক্তন ছাত্রশিবির সমাবেশ-২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।Thank you for reading this

কালীগঞ্জে পৌর বিএনপির উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

বনি আমিন, কালীগঞ্জ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর বিএনপির উদ্যোগে ৯টি ওয়ার্ডের ২০০ জন শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আল মাদরাসাতুল আরাবিয়া হযরত আলী (রা:) মাদ্রাসার ২০০ শিক্ষার্থীর মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেছে সদর উদ্দিন বিশ্বাস ফাউন্ডেশন।

কালীগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

বনি আমিন, কালীগঞ্জ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আল মাদরাসাতুল আরাবিয়া হযরত আলী (রা:) মাদ্রাসার ২০০ শিক্ষার্থীর মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেছে

মহিলা সহ আহত ১৫

শৈলকুপায় (হত্যা ও ধর্ষণ মামলার জেরে) আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ।।

শৈলকুপায় (হত্যা ও ধর্ষণ মামলার জেরে) আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ।। মহিলা সহ আহত ১৫Thank you for reading

সম্পদ বণ্টন সম্পর্কিত আল্লাহর নীতি প্রসঙ্গে

সম্পদ বণ্টন সম্পর্কিত আল্লাহর নীতি প্রসঙ্গে

ডেস্ক রিপোর্ট اللهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ تَشَاءُ وَيَقْدِرُ ط وَفَرِحُوا بِالْحَمُرِةِ الدُّنْبَاءِ وَمَا الْحَيوة الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ الأَمَتَاعُ المرور. আল্লাহ