জলাবদ্ধতায় ধ্বংসের মুখে পাইকারি মাছের বাজার, ক্ষতির মুখে শত শত ব্যবসায়ী

বনি আমিন, কালীগঞ্জ:

জলাবদ্ধতায় ধ্বংসের মুখে পাইকারি মাছের বাজার, ক্ষতির মুখে শত শত ব্যবসায়ী। কালীগঞ্জ মেইন বাস টার্মিনাল সংলগ্ন পাইকারি মাছের বাজারটি একসময় প্রাণচঞ্চল এবং এ অঞ্চলের মাছ ব্যবসার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল।

প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত জমজমাট এ বাজারে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ আশপাশের জেলা থেকেও মাছ ব্যবসায়ীরা ভিড় করতেন। তবে বর্তমানে এ বাজারটি চরম অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাজার এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুসমান পানি জমে থাকে। তার উপর নোংরা আবর্জনার স্তূপে পানি আরও স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে বাজারের ভেতর হাঁটা তো দূরের কথা, মাছ বহন ও সংরক্ষণ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। ব্যবসায়ীরা জানান, বৃষ্টির দিনে মাছ ভর্তি গাড়ি প্রবেশ করতে চায় না।

যারা আসে, তারাও অনেক সময় পানিতে মাছ পড়ে যাওয়া, বরফ গলে মাছ নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হন। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে হাটে হাটে। পাইকারি ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, “এ বাজারে প্রতিদিন প্রায় আড়াইশো মণ মাছ লেনদেন হতো। কিন্তু এখন মাছ আসছে খুবই কম। যারা মাছ আনেন, তারাও ক্ষতির ভয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। জলাবদ্ধতার মধ্যে ব্যবসা করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে।”

অন্য একজন ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা পৌর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি। অথচ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। একসময় যদি এমন চলতে থাকে, তাহলে এই পাইকারি বাজার একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।”

স্থানীয় বাসিন্দারাও একই ভোগান্তির কথা জানান। টার্মিনাল এলাকায় ভিড়ের সাথে যুক্ত হয়েছে দুর্গন্ধযুক্ত পচা পানি, যা বাজারের পরিবেশকেই বিষাক্ত করে তুলেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, অবিলম্বে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার, পানি নিষ্কাশনের সঠিক উপায়, এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। অন্যথায় এ বাজারের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও ভুক্তভোগীদের দাবি— প্রশাসনের দৃষ্টি ও দায়িত্বশীলতা না থাকলে শুধু ব্যবসা নয়, এলাকার সার্বিক পরিবেশও হুমকির মুখে পড়বে।

Scroll to Top