ডেক্স রিপোর্ট
দারিদ্র্য-নয়-সম্ভাবনার, সামাজিক ব্যবসা, সম্ভাবনার অর্থনীতি ও মানবিক বিনিয়োগ—এই তিনটি মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫।
বিশ্ববন্দিত অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এক গভীর মানবিক আবেদন তুলে ধরেন। “যদি দুনিয়া বদলাতে চাই, তবে ব্যবসাই হতে পারে সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠামো,”—বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের স্মৃতি টেনে এনে ড. ইউনূস বলেন, “সেই সময়ের ক্ষুধার্ত মুখগুলো আমার হৃদয়ে স্থায়ী হয়ে আছে। আজ আমি গর্বিত যে বাংলাদেশ সেই দুর্দশাকে অতিক্রম করে সম্ভাবনার পথে হাঁটছে।” তিনি দৃঢ় উচ্চারণে বলেন, “ব্যবসা শুধু মুনাফার জন্য নয়—এটি হতে পারে দারিদ্র্য বিমোচনের এক মহৎ উপায়। আজকের তরুণরা আর সরকারের অপেক্ষায় বসে থাকবে না, তারা নিজেরাই সৃষ্টি করবে এক নতুন পৃথিবী।”
ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা মানে কেবল আর্থিক লেনদেন নয়—এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব, একটি নৈতিক প্রতিশ্রুতি।” সম্মেলনে বিভিন্ন খাতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয় দেশের ও বিদেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ওয়ালটন (সেরা দেশি বিনিয়োগকারী), বিকাশ (সেরা বিদেশি বিনিয়োগকারী), স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ফেব্রিকস, এছাড়াও সম্মানসূচক বাংলাদেশি নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় ইয়ানওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং-কে।
অফিসিয়াল উদ্বোধনটি অনুষ্ঠিত হয় ৯ এপ্রিল (বুধবার) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে, যদিও সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে ৭ এপ্রিল থেকে এবং তা চলবে চারদিনব্যাপী। সমাপনী বক্তব্যে ড. ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেন—“যদি আমরা একটি কার্যকর সামাজিক কাঠামো গড়ে তুলতে পারি, তবে বাংলাদেশ একদিন হবে দারিদ্র্য মুক্তির আদর্শ মডেল, বিশ্বব্যাপী মানবিক ব্যবসার রোল মডেল।” বাংলাদেশ এখন শুধুই উন্নয়নশীল দেশ নয়—এটি বিশ্ব পরিবর্তনের গতিপথে এক শক্তিশালী অনুপ্রেরণা।